হৃদরোগের চিকিৎসার নামে নিজের স্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে দেহ ব্যবসায় ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভারতের ঘানশোলী এলাকা থেকে বাংলাদেশি ওই তরুণীকে উদ্ধার করে নবি মুম্বাইয়ের রাবালে পুলিশ থানার অপরাধ দমন শাখার ‘অ্যান্টি-হিউম্যান ট্র্রাফিকিং ইউনিট’ (এএইচটিইউ)। এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে ওই তরুণীর স্বামীসহ তিন ব্যক্তিকে, এর মধ্যে এক নারীও রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দেড় মাস আগে বাংলাদেশি নাগরিক আরিফ হাসান মন্ডল (২৯) তাঁর ১৯ বছর বয়সী স্ত্রী’র চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে ভারতে যান। নবি মুম্বাইয়ে পৌঁছনোর পর সুমন রাহীম শেখ (৩০) ও সনি পীযুশ দাশগুপ্ত (৩০) নামে দুই ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত হয় আরিফের। সেখানেই নিজের স্ত্রীকে দেহ ব্যবসায় ঠেলে দেওয়ার ব্যাপারে পাকা কথাবার্তা সেরে ফেলেন আরিফ।
পুলিশের অ্যান্টি-হিউম্যান ট্র্রাফিকিং ইউনিট (এএইচটিইউ)-এর সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর আনন্দ চহ্বন জানান ‘নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই ঘানশোলী এলাকার দত্ত নগরের একটি আবাসনে খদ্দের সেজে অভিযান চালানো হয়। এরপর ওই তরুণীর সাথে সাক্ষাতের পরই বাইরে ওঁত পেতে থাকা এক নারী পুলিশ কর্মীর নেতৃত্বাধীন পুলিশ টিম, প্রত্যক্ষদর্শী ও এক নারী সামাজিক কর্মীকে নিয়ে ওই আবাসন থেকে তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় তিনজনকে। মানব পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে’।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ‘রাহীম শেখ ও পীযুশ দাশগুপ্ত দুই জনেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তারা মূলত এজেন্টের কাজ করে। নবি মুম্বাইয়ে পৌঁছনোর পরই ওই তরুণীকে রাবালে এলাকায় রাহীম শেখের বাসায় নিয়ে তোলা হয় এবং পীযুশ খদ্দের জোগাড় করতে শুরু করে। প্রতি খদ্দেরের কাছ থেকে ২ হাজার রুপি নিয়ে তার মধ্যে ১ হাজার রুপি ওই তরুণীর স্বামীর হাতে তুলে দেওয়া হতো’।
আনন্দ চহ্বন জানান, ‘যে পাসপোর্ট নিয়ে আরিফ হাসান ভারতে আসেন সেটি গত বছরের ২৫ এপ্রিল ইস্যু করা হয়েছিল এবং পাসপোর্টির বৈধতা শেষ হবে আগামী ২০২২ সালে। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারী থেকে ২৫ আগষ্ট-এই ছয় মাসের ভিসা নিয়ে তিনি এদেশে আসেন। উদ্ধার হওয়া তরুণীর পাসপোর্টটিও বাংলাদেশের’। পুরো ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।